মুতার যুদ্ধের প্রাক্কালে রোমকদের সাথে যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত শুরু হয়েছিলো এর ফলেই পরবর্তীকালে মুসলমানদের বিজয় গৌরব দূরদূরান্তে বিস্তার লাভ করে। ছ্যারিয়্যা যাতে-ছালাছেলমুতার যুদ্ধে রোমক সৈন্যদের সাথে আরবদের বিভিন্ন গোত্রের সহযোগিতামূলক ভ‚মিকার কথা জেনে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন একটি...
কাজেই, উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি ছাড়া তিনহাজার সৈন্য দুই লাখ সৈন্যের মোকাবেলায় সাহসিকতাপূর্ণ বিজয় গৌরব সহজ কথা নয়। আরবের জনগণ বুঝতে সক্ষম হয়েছিলো যে, ইতিপূর্বে পরিচিত সকল শক্তির চেয়ে মুসলমানরা সম্পূর্ণ আলাদা। আল্লাহর সাহায্য মুসলমানদের সাথে রয়েছে। তাদের নেতা মোহামাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু...
কেননা, একমাত্র হযরত হযরত খালেদ রা. এর হাতেই ৯ টি তলোয়ার ভেঙ্গেছিল। এতেই শত্রু সৈন্যদের হতাহতের সংখ্যা সহজেই আন্দাজ করা যায়।মুতার যুদ্ধের প্রভাবযে প্রতিশোধ গ্রহণের উদ্দেশ্যে মুতা অভিযান পরিচালিত হয়েছিলো, সেটা সম্ভব না হলেও এ যুদ্ধের ফলে মুসলমানদের সুনাম সুখ্যাতি...
তারা মরুপ্রান্তরে নিয়ে পাল্টা হামলা করে পর্যুদস্ত করবে। এরূপ চিন্তা করে রোমক সৈন্যরা মুসলমানদের ধাওয়া না করে নিজেদের এলাকায় ফিরে গেলো। এদিকে মুসলমানরা পিছাতে পিছাতে মদীনায়া গিয়ে পৌঁছালেন।হতাহতের সংখ্যামুতার যুদ্ধে ১২ জন মুসলমান শাহাদাত বরণ করেন। রোমকদের মধ্যে কতোসংখ্যক হতাহত...
পরদিন সকলে হযরত খালেদ রা. সেনাদল রদবদল করে বিন্যস্ত করলেন। পেছনের সৈন্যদের সামনে আর সামনের সৈন্যদের পেছনে নিয়ে গেলেন। এরূপ অদল বদলের দৃশ্য থেকে শত্রæরা বলাবলি করতে লাগলো যে, মুসলমানরা সহায়ক সৈন্য পেয়েছে, তাদের শক্তি পূর্বাপেক্ষা বৃদ্ধি পেয়েছে। সেনা বিন্যাস...
এ যুদ্ধের পরিণতি সম্পর্কিত বর্ণনাসমূহে যথেষ্ট মতভেদ রয়েছে। সকল বর্ণনা পাঠ করার পর জানা যায় যে, যুদ্ধের প্রথম দিন শেষ পর্যায়ে হযরত খালেদ রা. রোমক সৈন্যদের মোকাবেলায় অবিচল ছিলেন। তিনি সেই সময় এক নতুন যদ্ধকৌশলের কথা ভাবছিলেন, যাতে রোমকদের প্রভাবিত...
যুদ্ধের সমাপ্তিবীরত্ব, বাহাদুরি ও নিবেদিত চিত্ততা সত্তে¡ও মুসলমানদের মাত্র তিন হাজার সৈন্য দুই লাখ অমুসলিম সৈন্যের সামনে টিকে থাকা ছিলো এক বিস্ময়কর ঘটনা। হযরত খালেদ ইবনে ওলীদ রা. এ সময়ে যে বীরত্বের পরিচয় দেন, ইতিহাসে তার তুলনা খুঁজে পাওয়া যায়...
এদিকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রণক্ষেত্রের খবর লোক পৌঁছার আগেই ওহীর মাধ্যমে পান। তিনি বলেন, যায়েদ পতাকা গ্রহণ করেছিলেন, তিনি শহীদ হন। এরপর জাফর পতাকা গ্রহণ করেছিলেন তিনি শহীদ হন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লমের চোখ এ সময় অশ্রুসজল হয়ে ওঠে।...
এরপর সাহাবার হযরত খালেদ ইবনে ওলীদ রা.-কে সেনাপতি নিযুক্ত করেন। তিনি পতাকা গ্রহণের পর তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। সহীহ বোখারীতে স্বয়ং খালেদ ইবনে ওলীদ রা. থেকে বর্ণিত রয়েছে যে, মুতার যুদ্ধের দিনে আমার হাতে ৯ টি তলোয়ার ভেঙ্গেছে। এরপর আমার...
আল্লাহর তলোয়ারহযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রওয়াহার শাহাদাতের পর বনু আযলান গোত্রের ছাবেত ইবনে আরকাম নামক একজন সাহাবী পতাকা গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, হে মুসলমানরা, তোমরা উপযুক্ত একজনকে সেনাপতির দায়িত্ব দাও। সাহাবার ছাবেতকেই সেনাপতির দায়িত্ব নিতে বললে তিনি বলেন, আমি একাজের উপযুক্ত...
কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বের পর তিনি এ কবিতা আবৃত্তি করে, ‘ওরে মন খুশী বেজার যেভাবে হোক মোকাবেলা কর। যুদ্ধের আগুন জ্বেলেছে ওরা বর্শা রেখেছে খাড়া। জান্নাত থেকে কেনরে তুই থাকতে চাস দূরে?’এরপর হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা রা. বীর বিক্রমে যুদ্ধ করতে থাকেন।...
জাফর ইবনে আবু তালেবকে সন্ধান করে নিহতদের মধ্যে পেয়ে যাই। তাঁর দেহে বর্শ ও তীরের ৯০টিরও বেশী আঘাত দেখেছি। নাফে থেকে বর্ণিত রয়েছে যে, ইবনে ওররের বর্ণনায় এও আছে যে, আমি এসকল জখল লক্ষ্য করেছি তাঁর সম্মুখভাগে। বীরত্বপূর্ণ যুদ্ধের মাধ্যমে...
ইমাম বোখারী নাফে-এর মাধ্যমে আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. একটি বর্ণনা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, মুতার যুদ্ধের দিনে হযরত জাফর শহীদ হওয়ার পর আমি তার দেহে আধাতের চিহ্নগুলো গুণে দেখেছি। তাঁর দেহে তীর ও তলোয়ারের পঞ্চাশটি আঘাত ছিলো। এ বস আঘাতের...
বলা হয়ে থাকে যে, একজন রোমক সৈন্য তরবারি দিয়ে তাকে এমন আঘাত করে যে, তার দেহ দ্বিখন্ডিত হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা তাঁকে বেহেশতে দুটি পাখা দান করেছিলেন। সেই পাখার সাহায্যে তিনি জান্নাতে যেখানে ইচ্ছা উড়ে বেড়ান। এ কারণে তাঁর উপাধি...
মহানবীর সা. ধারাবাহিক জীবনীএ ধরনের বীরত্বের পরিচয় মুসলমান ব্যতীত অন্য কারো ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায়নি। হযরত যায়েদ এর শাহাদাতের পর পতাকা তুলে নেন হযরত জাফর ইবনে আবু তালেব। তিনিও তুলনাহীন বীরত্বের পরিচয় দিয়ে লড়াই করতে থাকেন। তীব্র লড়াইয়ের এক পর্যায়ে...
ডানদিকে কোতাবা ইবনে কাতাদা আজরিকে এবং বামদিকে ওবাদা ইবনে মালেক আনসারী রা. কে নিযুক্ত করা হয়।সেনা নায়কদের শাহাদাতমুতা নামক জায়গায় উভয় দলের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে অত্যন্ত তিক্ত লড়াই হয়। মাত্র তিন হাজার মুসলিম, সৈন্য দুই লাভ অমুসলিম সৈন্যের সাথে এক...
কেউ কেউ অভিমত প্রকাশ করলেন যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে চিঠি লিখে উদ্ভুত পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করা হোক। এরপর তিনি হয়তো বাড়তি সৈন্য পাঠাবেন অথবা অন্য কোন নির্দেশ দেবেন। সেই নির্দেশ তখন পালন করা হবে। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রওয়াহা...
মুসলিম গুপ্তচররা এসে খবর দিলেন যে, রোমের কায়সার বালকা অঞ্চলের মাআব এলাকায় এক লাখ রোমক সৈন্য সমাবেশ করে রেখেছে। এছাড়া তাদের পতাকাতলে লাখাম, জাজাম, বলকিন, বাহরা এবং বালা গোত্রের আরো এক লাখ সৈন্য সমবেত হয়েছিল। উল্লিখিত শেষোক্ত এক লাখ ছিলো...
আমার কবরের পাশ দিয়ে যাবে যারা তারা বলবে এই সেই গাজী যাকে আল্লাহ হেদায়াত দিয়েছেন এবং যিনি হেদায়ত প্রাপ্ত।’ মুসলিম সৈন্যরা এরপর রওয়ানা হয়ে যান। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছানিয়াতুল অদা পর্যন্ত সেনাদলের সঙ্গে গিয়ে সৈন্যদের বিদায় জানান।মুসলিম বাহিনীর...
সেই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘এবং তোমাদের প্রত্যেকেই তা অতিক্রম করবে, এটা তোমাদের প্রতিপালকের অনিবার্য সিদ্ধান্ত।’ (সূরা মরিয়ম, আয়াত ৭১) আমি জানি না যে, জাহান্নামে পেশ করার পর ফিরে আসবো কিভাবে? মুসলমানরা বললেন, আল্লাহ তায়ালা সালামতির সাথে আপনাদের সঙ্গী হোন।...
ইসলাম বাহিনীর রওয়ানাইসলামী বাহিনী রওয়ানা হওয়ার প্রাক্কালে সাধারণ মুসলমানরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মনোনীত সেনানায়কদের সালাম এবং বিদায় জানান। সেই সময় অন্যতম সেনানায়ক হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রওয়াহা রা. কাঁদছিলেন। তাঁকে এ সময়ে কান্নার কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন,...
সৈন্যদলকে তিনি ওসিয়ত করেন যে, হারেছ ইবনে ওমায়েরের হত্যাকাÐের জায়গায় তারা যেন স্থানীয় লোকদের ইসলামের দাওয়াত দেন। যদি তারা ইসলাম গ্রহণ করে তবে তো ভালো, যদি ইসলাম গ্রহণ না করে তবে আল্লাহর দরবারে সাহায্য চাইবে এবং তাদের সাথে যুদ্ধ করবে।...
সেনানায়কদের প্রতি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিদেশরসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যায়েদ ইবনে হারেছা রা. কে এই সেনাদলের সেনাপতি মনোনীত করেন। এরপর বলেন যে, যায়েদ যদি নিহত হন তবে জাফর এবং জাফর যদি নিহত হন, তবে আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা...